বিএনপিকে তার ভারতনীতি স্পষ্ট করতে হবে
১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৮ এএম
ভারত তোষণনীতি নিয়ে আগামীতে কোনো দলের পক্ষে ক্ষমতায় যাওয়া যে কঠিন হবে, তা দেশের মানুষ এখন নানাভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন শুধু তার স্বৈরশাসনের জন্য হয়নি, এর মধ্যে রয়েছে তাকে স্বৈরশাসকে পরিণত করা ভারতের প্রতি চরম ক্ষুব্ধতা এবং বিদ্বেষ। জনগণ হাসিনার সাথে সাথে ভারতের আধিপত্যবাদের শিকড়ও উপড়ে ফেলেছে। হাসিনা ভারতের পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় যে দেশ চালাতেন, তা জনগণ তার শাসনামল থেকেই জানে। তারা তার শাসনামলের সাথে ১৭৫৭ সালে মীর জাফরের শাসনামলের মিল খুঁজে পেয়েছে। ইংরেজ বেনিয়া রবার্ট ক্লাইভ নবাব সিরাজ উদ-দৌলাকে পরাজিত করে সরাসরি ক্ষমতায় না গিয়ে বেইমান মীর জাফরকে ‘পুতুলরাজা’ সাজিয়ে নেপথ্যে থেকে বাংলাকে দুইশ’ বছর শাসনের পথ রচনা করেছিল। একই পন্থায় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দেয়া হাসিনাকে দিয়ে ভারত তাকে ‘পুতুলরানি’ বানিয়ে বাংলাদেশকে তার করায়ত্ত্বে রেখে শাসন করেছে এবং তা চলমান রাখতে চেয়েছিল। ইংরেজদের মতো নেপথ্যে থেকে দুইশ’ বছর শাসন করতে না পারলেও সাড়ে ১৫ বছর হাসিনাকে দিয়ে শাসন করেছে। ইংরেজরা যেমন বাংলা থেকে ধন-সম্পদ ইংল্যান্ডে নিয়ে গেছে, একইভাবে হাসিনাকে দিয়ে ভারত বাংলাদেশ থেকে তার সব স্বার্থ হাসিল করে নিয়েছে। ইংরেজদের কবল থেকে মুক্ত হতে এবং বাংলার স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করতে মানুষ দুইশ’ বছর সংগ্রাম করেছে। সিপাহী বিদ্রোহসহ অনেক অন্দোলন করেছে। তীতুমীর, টিপু সুলতানরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জীবন দিয়েছে। তাঁরা ইংরেজদের পতন ঘটাতে পারেননি ঠিকই, তবে ইংরেজদের দেশের শত্রু হিসেবে জনগণের সামনে চিহ্নিত করেছিলেন এবং পতনের পথ তৈরি করে দিয়েছিলেন। একইভাবে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরে বিএনপি ও তার জোটভুক্ত দলগুলো খুন, গুম, হামলা-মামলা, জেল-জুলুম, সীমাহীন নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হয়ে তার পতনের পথ তৈরি করে দিয়েছিল, যার চূড়ান্ত ফল আসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। এ অভ্যুত্থানেও নেপথ্যে বিএনপি ও তার মিত্র দলগুলোর নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করে জীবন দিয়েছে। ছাত্র-জনতার এ আন্দোলন দমাতে শেখ হাসিনাকে দিয়ে ভারত ও তার দোসর বাহিনী ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করেছে। দু’ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা এবং ২৫ হাজারের বেশি মানুষকে চিরতরে পঙ্গু ও অন্ধ করে দিয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোতে রামপুরায় ছাত্র-জনতার উপর বিজিবির পোশাক পরা হিন্দিভাষী ভারতীয়রা গুলি করেছিল বলে সে সময় ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের এক প্রতিবেদনে আন্দোলনরতদের বরাত দিয়ে তুলে ধরা হয়েছিল। বিডিআর হত্যাকা-ের সময় হিন্দিভাষী ভারতীয় লোকজন অংশগ্রহণ করেছিল বলে নিহত অফিসারদের স্বজনরা এখন বলছেন। ভারত এভাবেই হাসিনাকে দিয়ে ইংরেজদের মতো বাংলাদেশকে তার উপনিবেশে পরিণত করেছিল। সেই ভারতের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের বিদ্বেষ ও ক্ষোভ সবসময় থাকবে, এটাই স্বাভাবিক।
দুই.
দেশের সিংহভাগ মানুষের ক্ষোভ উপেক্ষা করে যারা ভারত তোষণ নীতির মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, তাদের এ স্বপ্ন কোনোদিন পূরণ হবে না। কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের মধ্যে এই বাস্তবতা উপেক্ষা করার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। তাদের মধ্যে সেই কলোনিয়াল মনোভাব রয়ে গেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে ভারতের প্রতি জনগণের বিদ্বেষ ও বিরোধিতা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, তা রাজনৈতিক দলগুলো বুঝতে পারছে না। কিংবা বুঝেও না বোঝার ভান করছে। তবে ভারত যে জনগণের কাছে এখন অপ্রাসঙ্গিক, তা ইতোমধ্যে তারা বুঝিয়ে দিয়েছে। তারা মালদ্বীপের মতো ভারতকে কিকআউট করে দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন ভারতের যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে রুখে দাঁড়াচ্ছে। এ মাসের প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে, তা জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে। এসব এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে বেড়া নির্মাণ করতে গেলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বাধা দেয়, যা ছিল দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন। এই বাধা দেয়ার ক্ষেত্রে বিজিবি একা ছিল না। তার সাথে শত শত বাংলাদেশী লাঠি, রামদা, কাস্তে নিয়ে বিএসএফের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। এমনকি, কঠোর পরিশ্রম করে সীমান্তে বাংকার তৈরি করে। অন্যদিকে, ঝিনাইদহ সীমান্তে ভারতের দখলে থাকা কোদলা নদীর প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা বিজিবি উদ্ধার করেছে। যে নদী এতদিন ভারতের দখলে ছিল, বাংলাদেশীরা কখনো নামতে পারত না, এখন তারা সেখানে মাছ ধরছে, গোসল করছে। এই দুই ঘটনা থেকে এটাই প্রমাণিত হয়, সীমান্তে ভারতের আগ্রাসন, খুন, নির্যাতন, নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ দাঁড়িয়েছে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তারা আপসহীন হয়ে উঠেছে। ভারতকে আর তারা পরোয়া করে না এবং ছাড়ও দেবে না। জীবন দিয়ে হলেও দেশের প্রতি ইঞ্চি মাটি তারা রক্ষা করবে। অথচ হাসিনার দেড় দশকের বেশি সময় ধরে সীমান্তে এমন দৃশ্য দেখা যায়নি। বিজিবিকেও এমন সাহসী হয়ে উঠতে দেখা যায়নি। বরং বিএসএফ বাংলাদেশীদের পাখির মতো গুলি করে মারলেও তার পাল্টা জবাব না দিয়ে বিএসএফের সাথে বিজিবিকে রাখি বন্ধন ও মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে। এর কারণ ছিল, ভারত হাসিনাকে দিয়ে বিজিবিকে মেরুদ-হীন করে রেখেছিল। নতুন বাংলাদেশে এই বিজিবিকে এখন সোজা করে দাঁড় করানো হয়েছে। দেশের সীমান্ত রক্ষায় তাদের সাহসী ও উজ্জীবিত করে তোলা হয়েছে। বিএসএফের চোখে চোখ রেখে কথা বলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দুঃখের বিষয়, সীমান্তে ভারতের বিরুদ্ধে বিজিবি ও জনগণের রুখে দাঁড়ানো নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কোনোটিই কোনো বিবৃতি দেয়নি। বিজিবি ও জনগণের সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করেনি। কেন? ভারত নাখোশ হবে বলে? রাজনৈতিক দলগুলো কি মনে করে, তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার ক্ষেত্রে ভারত অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে? কিংবা তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে? তাদের যদি এই মানসিকতা থাকে, তাহলে তাদের উচিৎ ঢাকার আয়তনের চেয়েও ছোট (২৯৮ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা প্রায় ৫ লাখ ১৫ হাজার) মালদ্বীপের কাছ থেকে শিক্ষা নেয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু যখন নির্বাচন করেছিলেন, তখন তার নির্বাচনের মূল ইশতেহারই ছিল ‘ইন্ডিয়া আউট’। এতে দেশটির জনগণ বিপুল সমর্থন দিয়ে তাকে বিজয়ী করে এবং মুইজ্জুও ক্ষমতাসীন হয়ে ভারতকে আউট করে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছেন। ভারত কি মুইজ্জুকে ঠেকাতে পেরেছিল? পারেনি। সম্প্রতি ভারত তার গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’কে দিয়ে মুইজ্জুকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চেয়েছিল। তার সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে। এর কারণ কি? কারণ হচ্ছে, তার সাথে জনগণ রয়েছে। মালদ্বীপের চেয়ে আয়তনে অনেক বড় এবং ১৮ কোটি জনগণকে সাথে নিয়ে কি রাজনৈতিক দলগুলো ভারতের অন্যায় ও অমর্যাদাকর আচরণের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে না? যে ভারত আমাদের তার কলোনি বানিয়ে রাখতে চায়, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করে, রাজনৈতিক দলগুলোকে কেন পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে সেই ভারতের তাঁবেদারি করতে হবে? তারা কি মনে করে, আগামী নির্বাচনে হাসিনার শাসনামলের মতো ভারত দূত পাঠিয়ে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে? যদি তা মনে করে থাকে, তাহলে তারা বদলে যাওয়া বাংলাদেশ ও জনগণের পাল্স বুঝতে অক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে। তাদের এই ভারত তোষণ প্রবণতা জনগণ আর কোনোদিনই মানবে না।
তিন.
ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ-এর সম্পাদক নুরুল কবীর সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ভারত বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করে। এই অপছন্দ করার কারণ হচ্ছে, ভারত মনে করে, বাংলাদেশের জনগণের ভারতবিরোধিতার মনোভাব তিনি ধারন করে আছেন। জনগণও তাঁকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করে। এ কারণেই জনগণ বেগম খালেদা জিয়াকে ‘মা ও মাটি’ বলে সম্বোধন করে। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, বেগম খালেদা জিয়াকে দিয়ে ভারত হাসিনার মতো তার স্বার্থ হাসিলে যা খুশি তা করাতে ও নিয়ে যেতে পারবে না, যেমন খুশি তেমন আচরণও করতে পারবে না। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে তিনি অপস করবেন না। ভারতের অন্যায় আবদার রক্ষা করবেন না। ভারতকে বাংলাদেশের সাথে সমস্বার্থভিত্তিক এবং যথাযথ কূটনৈতিক আচরণের মধ্যে থাকতে হবে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, বেগম খালেদা জিয়ার ভারতের অন্যায় আচরণবিরোধী এই দৃঢ় মনোভাব দলের অন্য নেতারা ধারণ করতে পারছেন না। দলটির শীর্ষ নেতাদের কারো কারো মধ্যে ভারত তোষণ প্রবণতা বিদ্যমান। ভারতের অন্যায় আচরণ সত্ত্বেও সে অসন্তুষ্ট হয়, এমন বক্তব্য দিতে দেখা যায় না। তারা যেন হাসিনারই পদাঙ্ক অনুসরণ করছেন। কেন, কি কারণে? তারা কি দেখছেন না, দেশের শতকরা নব্বই ভাগ মানুষ এখন ভারতবিরোধী, সীমান্তে বিএসএফের বিরুদ্ধে দা-খুন্তি নিয়ে তারা দাঁড়িয়ে যাচ্ছে? দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তারা জীবন দিতেও কুণ্ঠিত নয়। তারা কি হাসিনার শাসনামলের মতো আবার সীমান্তে গুলি খেয়ে মরতে চায়? ভারতের অন্যায় আচরণের শিকার হতে চায়? যদি চাইত, তাহলে তারা কি এভাবে ভারতের বিরুদ্ধে দাঁড়াত? আর আগামী নির্বাচনে ভারতের প্রতি নমনীয় ও তাঁবেদার কোন দল ক্ষমতায় আসুক, তারা কি তা চাইবে? চাইবে না এবং ক্ষমতায়ও যেতে দেবে না। শুধু বিএনপিই নয়, একটি ইসলামী রাজনৈতিক দলকেও ভারতের প্রতি নমনীয় মনোভাব পোষণ করতে দেখা গেছে। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এমন বক্তব্য দিতে দেখা গেছে, যাতে ভারত নাখোশ না হয়। অর্থাৎ শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তারা ভারতের কাঁধে ভর দিতে চাইছে। অথচ ভারত এই দলটিকে সবসময়ই ‘জঙ্গীবাদী দল’ হিসেবে আখ্যায়িত করে আসছে। এ কথা ভুলে এখন সে যেন সেই ভারতকেই খুশি করতে উঠেপড়ে লেগেছে, যাতে তাকে ক্ষমতায় আসতে সহযোগিতা করে। এটা এখন দিনের আলোর মতো পরিস্কার, ভারত বাংলাদেশ থেকে আউট হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এই দিশেহারা হওয়া বোঝা যায়, মোদি সরকার, বিরোধীদল এবং তাদের মিডিয়ায় বাংলাদেশবিরোধী অবস্থান, বেসুমার মিথ্যা প্রচারণা থেকে। বাংলাদেশ থেকে আউট হয়ে যাওয়া তারা মানতে পারছে না। ফলে তার তাঁবেদারির বাইরে যাবে না, এমন দল যাতে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে, এখন সেই কলাকৌশল অবলম্বন করছে। আওয়ামী লীগের বাইরে সে যাদেরকে তার শত্রু দল হিসেবে সবসময় বিবেচনা করে, সে দল এবং তার বাইরের দলগুলোর সাথে মিষ্টি কথা বলে মিত্রতা করতে চাইছে। ক্ষমতায় যাওয়ার সহযোগিতার টোপ দিচ্ছে। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ভারতের এই টোপ যেন তারা গিলছে। তবে ভারতের এই ‘বিষটোপ’ যদি তারা গেলে, তাহলে তাদের পরিণতি যে হাসিনার মতো হবে, তাতে সন্দেহ নেই। কারণ, নতুন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কোনো ঠাঁই নেই। জনগণ তাকে আর ফিরতে দেবে না। আওয়ামী লীগের মতো ভারতের কোনো তাঁবেদার দল ক্ষমতায় আসুক, তাও তারা হতে দেবে না। কারণ, তারা মালদ্বীপের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছে। আগামী নির্বাচনে তারা সেই শিক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে।
চার.
বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো যদি জনগণের ভারতবিরোধী মনোভাব উপলব্ধি না করে, তবে তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার আশা ক্ষীণ। যে দল ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারবে, ভারতের দাদাগিরির তোয়াক্কা করবে না, এমন দল যে জনগণ বেছে নেবে, সেটা নিশ্চিত। বলা বাহুল্য, বেগম খালেদা জিয়া এখন আর শুধু বিএনপির নেত্রী নন, তিনি জাতীয় নেত্রী। তার সমর্থক বিএনপি’র মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, দেশের ১৮ কোটি মানুষ তার নেতাকর্মীতে পরিণত হয়েছে। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, তিনিই পারবেন ভারতের আধিত্যবাদ থেকে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে। তিনি দেশের অভিভাবক। তিনিই বাংলাদেশ। এজন্যই তারা বলে, তিনি হাসলে বাংলাদেশ হাসে, তিনি কাঁদলে বাংলাদেশ কাঁদে। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের আত্মপরিচয়ের যে দর্শন প্রতিষ্ঠা করে গেছেন, বেগম খালেদা জিয়া সেই দর্শন ধারণ করেই এগিয়েছেন। শত নিপীড়ন-নির্যাতন, জেল-জুলুমেও তিন এ দর্শন থেকে বিচ্যুত হননি। ভারতের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেছেন। বিএনপির নেতৃবৃন্দের উচিৎ হবে, বেগম খালেদা জিয়ার এই নীতি ধারন করে সেই পথেই এগিয়ে যাওয়া। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ভারততোষণ বা তাঁবেদারির প্রয়োজন নেই। দলটিকে মনে রাখতে হবে, অতীতে ক্ষমতায় যাওয়া এবং ভবিষ্যতে ক্ষমতায় যাওয়ার মূল চাবিকাঠি হচ্ছে, তার ভারতের সঙ্গে সার্বভৌম সমতা ভিত্তিক রাজনীতি। এই নীতি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের, এ নীতি বেগম খালেদা জিয়ার। এর বাইরে গেলে তার ক্ষমতায় যাওয়া ও টিকে থাকা সম্ভব হবে না। বিএনপিকে বুঝতে হবে, ভারতের চারপাশের দেশগুলোর সরকার টিকে আছে, তাদের জাতীয় স্বার্থমুখী রাজনীতির কারণে।
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ভাঙ্গায় এক্সপ্রেসওয়েতে পড়েছিল মোটরসাইকেল আরোহীর চূর্ণ-বিচূর্ণ লাশ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদরাই আজকের বাংলাদেশ- কক্সবাজারে শিল্প উপদেষ্টা
অতিরিক্ত সময়ে এন্দ্রিকের জোড়া গোলে জিতে শেষ আটে রিয়াল
গ্রিক সাইপ্রিয়ট প্রশাসনকে অস্ত্র বিক্রয়ের মার্কিন সিদ্ধান্তে টিআরএনসি-এর ক্ষোভ ও উদ্বেগ
নরসিংদীতে বাস-ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ৮
পাবনায় জনজীবনে ভয়াবহ হচ্ছে ভার্চুয়াল আসক্তি
মাঝ আকাশে ভেঙে টুকরো ইলন মাস্কের ‘স্টারশিপ’
বাংলাদেশ-ভারতকে অতীত কবর দিয়ে নতুন করে শুরু করতে হবে: সুনন্দা কে দত্ত রায়
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন
সাইফ ইস্যুতে কেজরিওয়ালের বিস্ফোরক মন্তব্য, পাল্টা প্রতিক্রিয়া বিজেপি নেতার
ট্রাম্পের শুল্ক ছাড়াও চীনের অর্থনৈতিক সংকটে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ !
খেজুরের রস খেতে গিয়ে গাড়িচাপায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
দিয়ালোর দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে ইউনাইটেডের নাটকীয় জয়
আজারবাইজান-জর্জিয়া সম্পর্ক শক্তিশালীকরণে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক
আসাদগেটে সিএনজি-ট্রাক সংঘর্ষ, একজনের মৃত্যু
মরক্কোতে নৌকা ডুবে ৪৪ পাকিস্তানির মৃত্যু
'বন্ধী মুক্তির চুক্তি' চূড়ান্ত জানিয়েছে নেতানিয়াহুর দপ্তর
সুদানের সেনাপ্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ যুক্তরাষ্ট্রের
উ. কোরিয়ার ইউক্রেনে সামরিক অংশগ্রহণ একটি কৌশলগত ভুল : রব বাউয়ার
সাইফ তো লিস্টে ছিল না,হঠাৎ হামলা হয়ে গেছেঃ মমতা